
পাবনার ঈশ্বরদীতে সদ্যোজাত আটটি কুকুরছানাকে পুকুরে ফেলে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে প্রাণী অধিকার আন্দোলনে সক্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি দাবি করেছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, “ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরের বাচ্চাকে মেরে ফেলল নির্দয়, নিষ্ঠুর, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ! খুনির কঠোরতম শাস্তি চাই।” তাঁর এই পোস্টে হাজারো মানুষ একাত্মতা প্রকাশ করে প্রাণী নির্যাতন আইনের আরও কঠোর প্রয়োগের দাবি তুলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তার সরকারি কোয়ার্টারের আঙিনায় একটি মা কুকুর আটটি ছানার জন্ম দেয়। গত সোমবার হঠাৎ মা কুকুরটিকে অস্থিরভাবে ছুটোছুটি ও কাঁদতে দেখে স্থানীয়রা খোঁজ নিতে শুরু করেন। তখনই তারা জানতে পারেন, ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। পরে মৃত ছানাগুলো উদ্ধার করা হলে মা কুকুরটি পাশে বসে আর্তনাদ করতে থাকে। হৃদয়বিদারক এই দৃশ্যের পর ছানাগুলোকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা হাসনুর রহমান নয়ন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে লজ্জিত ও দুঃখিত বলে জানান। তিনি বলেন, “আমার সন্তানদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্ত্রী ছানাগুলোকে সরাতে বলেছিল। কিন্তু সেগুলোকে মেরে ফেলা হবে—তা ভাবিনি।”
এদিকে, উপজেলা প্রশাসন এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান এই কাজকে ‘চরম অমানবিক ও নিষ্ঠুর’ আখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে এক দিনের মধ্যে সরকারি কোয়ার্টার ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, মা কুকুরটির চিকিৎসার দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া চলছে এবং অনেকেই দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

